ফ্রেন্ডস ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে আপনাকে জানাচ্ছি স্বাগতম



Small Office Networking- অফিস নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে জানুন নতুনদের জন্য


যে কোন কাজ করার আগে তার কি কি জিনিস প্রয়োজন সেটা জানা আবশ্যক। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় Small Office Networking (স্মল অফিস নেটওয়ার্কিং)। নেটওয়ার্কিং কি তা জানতে পূর্বের পোস্ট টি দেখে নিন। তাহলে বুঝতে অনেক সুবিধা হবে। স্মল অফিস নেটওয়ার্কিং এর ক্ষেত্রে আমরা লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক ব্যবহার করব।

আসুন জেনে নেই স্মল অফিস নেটওয়ার্কিং করতে কি কি প্রয়োজন।
  • কিছু কম্পিউটার
  • সুইচ/হাব
  • ডাটা ক্যাবল
  • কানেক্টর
  • নেটওয়ার্কিং টুলবক্স

এখন আমরা নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানবঃ
আমরা প্রথমে নির্বাচন করে নিব যে আমরা কতটা পিসির সাথে আমাদের নেটওয়ার্কি করব। সেই হিসেবে আমাদের নেটওয়ার্কিং ক্যাবল (ডাটা ক্যাবল) কে সাজাতে হবে। উল্লেখ্য যে, ক্যাবলিং ২ ভাবে করা যায় একটা ক্রস ওভার কানেকশন অন্যটি স্টেট থ্র। একাধিক কম্পিউটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের ক্যাবলিং স্ট্রেট থ্র আকারে সাজাতে হবে। বর্তমানে বাজারে রেডি নেটওয়ার্কিং ক্যাবল পাওয়া যায়।

কাজের ধারাঃ
নেটওয়ার্কিং ক্যাবল রেডি করার পর আমরা কম্পিউটার এর সেটআপ গুলো করব। যা ধারাবাহিক ভাবে নিচে উল্লেখ করা হলঃ
 (ছবি গুলো বড় করে দেখতে ছবির গায়ে ক্লিক করুন)



প্রথমে My Computer>Properties>Work group Name এ যেতে হবে। উল্লেখ থাকে যে, Work group Name একই হতে হবে। অন্যথায় ডাটা ট্রান্সফার করা সম্ভব হবে না। এখানে কম্পিউটার এর নাম বিভিন্ন হতে পারে।
এখন Control Panel হতে Network and Sharing Center এ যেতে হবে। এবং Change Adapter setting a click করতে হবে।
তারপর Local Area Network a Right Click করে Properties এ যেতে হবে। ওখান থেকে IPV4 ভার্সন এ ক্লিক করে Properties এ ক্লিক করতে হবে।

তারপর  Use Following IP তে ক্লিক করে C class এর একটি আইপি লিখব। সাবনেট মাস্ক অটোমেটিক আসবে। ডিফল্ট গেটওয়ে দেয়া লাগবে না।
এখন Network and Sharing Center>Advanced sharing settings এ ক্লিক করলে এমন একটি ম্যাসেজ আসবে।

সবগুলো অপশন Turn On করে দিতে হবে এবং ‍Save change  এ ক্লিক করতে হবে।
তারপর control Panel থেকে windows firewall setting  এ গিয়ে Turn off Firewall এ ক্লিক করে ‍সবগুলো অপশন Off করে দিব।
এখন সেভ দিয়ে বের হব।
আমাদের কাজ করা শেষ। একই ভাবে যতগুলো পিসিতে নেটওয়ার্কিং করব তার সেটআপ করতে হবে।
এখন আমাদের Computer এর নেটওয়ার্ক থেকে আমরা আমাদের নেটওয়ার্ক ভূক্ত পিসিগুলোর সাথে তথ্য আদান প্রদান করতে পারব।

 

নেটওয়ার্ক টপোলজি- বিস্তারিত

নেটওয়ার্ক টপোলজি নিয়ে আলোচনা করার আগে জেনে নেই কি কি আছে আজকের বিষয়ঃ
  • বাস টপোলজি
  • স্টার টপোলজি
  • রিং টপোলজি
  • মেশ টপোলজি
  • হাইব্রিড টপোলজি
আমরা আমাদের বাস্তব জীবনের শিক্ষাক্ষেত্রে বায়োলজি, জুওলজি ইত্যাদি শব্দের সাথে পরিচিত ছিলাম। বায়োলজি হলো জীবসম্পর্কিত জ্ঞান। নেটওয়ার্কের জগতে এরকম একটি ‘লজি’ হলো টপোলজি (topology)। একটি নেটওয়ার্ক দেখতে যেমন দেখা যায় তাই হলো টপোলজি। 
নেটওয়ার্কে কম্পিউটারসমূহ একটি আরেকটির সাথে সংযুক্ত থাকার পদ্ধতিকে বলা হয় টপোলজি। নেটওয়ার্ক ডিজাইনের ক্ষেত্রে এই টপোলজি বিশেষ ভূমিকা রাখে। কোন কাজের জন্য নেটওয়ার্ক ব্যবহার করব তার উপর ভিত্তি করে উপযুক্ত টপোলজি বাছাই করা দরকার। প্রতিটি টপোলজিরই কিছু সুবিধা ও অসুবিধা আছে। এসব বিবেচনা করে উপযুক্ত টপোলজি বেছে নিতে হবে। এখন জেনে নিই কোন কাজের জন্য কোন টপোলজি এবং এর সুবিধা ও অসুবিধা--

নেটওয়ার্ক টপোলজিকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। ১) ফিজিক্যাল টপোলজি ও2) লজিক্যাল টপোলজি


নেটওয়ার্কিং মিডিয়া বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইসের সাথে যেভাবে যুক্ত থাকে সেই লেআউটকে বলা হয় ফিজিক্যাল টপোলজি।

বাস টপোলজি

 ছোট, সহজে ইনস্টলযোগ্য ও কম ব্যয়ের মধ্যে নেটওয়ার্ক গড়তে চাইলে বাস টপোলজি ব্যবহার করা হয়। বাস টপোলজিতে একটি মূল ক্যাবল সরাসরি চলে যায় এবং এর সাথে যুক্ত থাকে প্রতিটি কম্পিউটার। এখানে মূল ক্যাবল যেটি একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে চলে যায় তাকে বলা হয় বাস (bus)। বাসের দু’প্রান্তে থাকে টার্মিনেটর যা ইলেকট্রিক সিগন্যালকে শুষে নেয়। 

সাধারণত বাস নেটওয়ার্কে সচরাচর একটিমাত্র ক্যাবল কোনো প্রকার ইলেকট্রোনিক ডিভাইস, যেমন রিপিটার বা অ্যামপ্লিফায়ার ছাড়া ব্যবহৃত হয় যাতে এক কম্পিউটারের সিগন্যাল আরেক কম্পিউটারে সরাসরি যেতে পারে। তাই এই টপোলজিকে প্যাসিভ টপোলজি (passive topology) বলা হয়। যখন একটি কম্পিউটার অন্য কোনো কম্পিউটারের উদ্দেশ্যে মেসেজ পাঠায় তখন সেই মেসেজ সিগন্যাল ক্যাবলের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে সবকটি কম্পিউটারের নিকট পৌঁছে। যে কম্পিউটারের উদ্দেশ্যে সেটি পাঠানো হয় কেবল সেটিই সে মেসেজ গ্রহণ করে আর অন্যরা কেবল সেই প্যাকেটকে বাতিল করে দেয়, সেটির দিকে কোনো নজর না দিয়েই।

বাস টপোলজির সুবিধা হলো -
  • ছোটখাটো নেটওয়ার্কের জন্য এটি খুবই সহজ, স্বল্পব্যয়ের, সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং সহজে বোধগম্য একটি টপোলজি।
  • বাস নেটওয়ার্কে সবচেয়ে কম দৈর্ঘ্যের ক্যাবল লাগে। এর ফলে ব্যয় কম হয়।
  • বাসকে বেশিদূর সম্প্রসারণ এবং সিগন্যাল পারফরম্যান্স সমুন্নত রাখতে রিপিটার ব্যবহার করা যেতে পারে। রিপিটার ইলেকট্রিক সিগন্যালকে অ্যামপ্লিফাই করে।

বাস টপোলজির অসুবিধা হলো -
  • নেটওয়ার্ক ব্যবহার বেশি হলে পারফরম্যান্স খুব দ্রুত খারাপ হতে পারে। 
  • একইসময়ে কেবল একটিমাত্র কম্পিউটার মেসেজ পাঠাতে পারে। তার মেসেজ পাঠানো শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্যদের অপেক্ষা করতে হয়।
  • বাস নেটওয়ার্ক ট্রাবলশ্যুট করা কষ্টকর। যদি বাসের কোনোখানে ক্যাবল ব্রেক করে তাহলে সেটি সহজে বের করা যায় না।
  •  বাস নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে পুরো নেটওয়ার্ক অকেজো হয়ে যায়।

স্টার টপোলজি

 স্টার টপোলজিতে সকল কম্পিউটার থেকে ক্যাবল এসে একটি কেন্দ্রীয় স্থানে যুক্ত হয় । এই সেন্ট্রাল লোকেশনে থাকে একটি ডিভাইস যাকে বলা হয় কনসেনট্রেটর বা হাব (hub) অথবা সুইচ (switch)। এই টপোলজিতে সবকটি কম্পিউটারের সংযোগ এক জায়গায় যুক্ত থাকে বলে একে কনসেনট্রেটেড টপোলজিও বলা হয়। নেটওয়ার্ককে সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা থাকলে এই টপোলজি বেশ সুবিধাজনক। এতে সহজেই নেটওয়ার্ককে সম্প্রসারণ করা যায় কেবল হাব অথবা সুইচের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়ে।

স্টার টপোলজিতে কোনো কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারের নিকট মেসেজ পাঠাতে চাইলে সিগন্যাল পাঠায় সরাসরি হাব/সুইচের নিকট। হাব/সুইচ সেই সিগন্যালকে সব কম্পিউটারে কিংবা ওই গন্তব্য কম্পিউটারের নিকট পাঠায়। যদি সেই নেটওয়ার্ক হয়ে থাকে ব্রডকাস্ট-বেজড বা হাব-বেজড তাহলে হাব থেকে সিগন্যাল যাবে সবক'টি কম্পিউটারে। আর যদি সেটি সুইচড নেটওয়ার্ক হয় তাহলে সুইচ সেই সিগন্যালকে নির্দিষ্ট কম্পিউটারের নিকট পাঠিয়ে দেবে

স্টার টপোলজির সুবিধা হলো -
  • সহজেই নেটওয়ার্কে অধিকসংখ্যক কম্পিউটার যোগ করা যেতে পারে।
  • স্টার টপোলজিতে কম্পিউটারের সংখ্যা নির্ভর করে হাব/সুইচ এ কয়টি পোর্ট আছে তার উপর।
  • নেটওয়ার্কে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সহজেই কেন্দ্রীয় অবস্থান অর্থাৎ হাব/সুইচ থেকে সমস্যা অনুসন্ধান শুরু করা যায়।
  • নেটওয়ার্কের কোনো একটি কম্পিউটার বিকল হয়ে গেলে তা নেটওয়ার্কের উপর কোনো প্রভাব ফেলে না।
  • হাব/সুইচ বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল সাপোর্ট করলে একইসাথে কয়েক ধরনের ক্যাবল ব্যবহারের সুবিধা পাওয়া যায়।

স্টার টপোলজির অসুবিধা হলো -
  • কেন্দ্রের হাব/সুইচ অকেজো হয়ে গেলে পুরো নেটওয়ার্কই বিকল হয়ে পড়ে।
  • এই টপোলজিতে অধিক ক্যাবল লাগে। কারণ প্রতিটি কম্পিউটার থেকে ক্যাবলকে কেন্দ্রীয় হাব/সুইচ এর নিকট নিয়ে যেতে হয়। ক্যাবল বেশি লাগায় খরচও বেশি হয়।

রিং টপোলজি


রিং টপোলজিতে একটি কম্পিউটার আরেকটি কম্পিউটারের সাথে যুক্ত থাকে এবং শেষ কম্পিউটারটি যুক্ত হয় প্রথম কম্পিউটারের সাথে। এভাবে এটি একটি রিং বা বলয় তৈরি করে। এই বলয়ের প্রতিটি কম্পিউটার সমান অধিকার পায় ডাটা প্রবাহের ক্ষেত্রে।
উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য এ ধরনের টপোলজি ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের নেটওয়ার্কের বড় সুবিধা হলো এখানে প্রতিটি কম্পিউটার সমান অধিকার পায় এবং অধিক কম্পিউটারের কারণে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স কমে গেলে সেটি সবার জন্যই প্রযোজ্য হয়। রিং টপোলজিকে বলা হয় অ্যাক্টিভ টপোলজি। 
রিং টপোলজির সুবিধা হলো -
  • প্রতিটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কে সমানভাবে প্রবেশের সুযোগ পায়, কারণ টোকেন প্রত্যেক কম্পিউটারের কাছেই যায়।
  • সব কম্পিউটারের সমানাধিকার থাকার ফলে নেটওয়ার্ক ডিগ্রেডেশনও হয়ে থাকে সমানভাবে। তার মানে কম্পিউটারের সংখ্যা বেশি হয়ে গেলে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স হ্রাস পায়, এবং হ্রাস পাওয়ার ফল সবাই সমানভাবে ভোগ করে।
রিং টপোলজির অসুবিধা হলো -
  • রিঙের একটি কম্পিউটার অকেজো হয়ে গেলে পুরো নেটওয়ার্ক অকেজো হয়ে যায়।
  • রিং নেটওয়ার্কে কোনো সমস্যা হলে ক্রুটি খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
  • নেটওয়ার্ক রিং থেকে কোনো কম্পিউটার সরিয়ে নিলে কিংবা এতে কোনো কম্পিউটার যোগ করলে নেটওয়ার্কের কাজ বিঘ্নিত হয়।

 মেশ টপোলজি


মেশ টপোলজিতে প্রতিটি কম্পিউটার প্রতিটির সাথে যুক্ত থাকে। এতে অনেক সংযোগ তৈরি করতে হয়। এখানে সংযোগের সংখ্যা বেশি হওয়ায় বড় ধরনের নেটওয়ার্কে মেশ টপোলজি ম্যানেজ করা প্রায় অসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই দেখা যায় বেশিরভাগ মেশ টপোলজিতেই সত্যিকার মেশ ব্যবহার না করে হাইব্রিড মেশ ব্যবহৃত হয়।

হাইব্রিড টপোলজি


এখানে উল্লেখিত বিভিন্ন টপোলজির একাধিক টপোলজি নিয়ে গড়ে ওঠে হাইব্রিড টপোলজি। এতে একইসাথে কোনো অংশে স্টার কোনো অংশে বাস কিংবা রিং টপোলজি ব্যবহার হতে পারে।